
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।
দাওয়াহর পথে, সত্য বলার পথে কিংবা ইসলামী রূহানী চিকিৎসার খেদমতে যারা নিজেদের নিয়োজিত করেন, তাদের অনেকেই জীবনের কোনো না কোনো পর্যায়ে মিথ্যা অপবাদ, বদনাম ও ভিত্তিহীন দোষারোপের শিকার হন।
যদিও তাদের উদ্দেশ্য থাকে শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা, তথাপিও সমাজের একাংশ না বুঝে, না যাচাই করেই তাদের নিয়ে কটূক্তি করতে দ্বিধা করে না।
আজকে আলোচনা করবো — ইসলামের আলোকে মিথ্যা অপবাদের ভয়াবহতা, কুরআন ও হাদীসে এ বিষয়ে কী বলা হয়েছে, এবং একজন দায়ী কীভাবে এমন পরিস্থিতিতে ইসলামীভাবে অবস্থান গ্রহণ করতে পারেন।
📖 কুরআনের আলোকে অপবাদ: এক নিষিদ্ধ আচরণ
মিথ্যা অপবাদ বা ভিত্তিহীন দোষারোপ কুরআনের দৃষ্টিতে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
🔹 আল্লাহ বলেন:
“হে মুমিনগণ! তোমরা একে অপরকে বিদ্রূপ কোরো না। হতে পারে বিদ্রূপকারী দলই নিকৃষ্ট এবং বিদ্রূপিত দল উত্তম। আর একে অপরকে দোষারোপ করো না, মন্দ নামে ডেকো না।”
— (সূরা হুজুরাত: ১১)
🔹 আরও বলেন:
“যারা মুমিন পুরুষ ও নারীদের এমন কিছুর জন্য দোষারোপ করে যা তারা করেনি, তারা তো মিথ্যা অপবাদ এবং স্পষ্ট পাপের বোঝা বহন করে।”
— (সূরা আহযাব: ৫৮)
📌 এসব আয়াত থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, যাচাই ছাড়া মুসলিম ভাইকে অপবাদ দেওয়া হারাম, এবং এমন কাজ আল্লাহর কাছে বড় গুনাহ হিসেবে গণ্য হয়।
🕋 হাদীসে অপবাদের ভয়াবহতা
রাসূলুল্লাহ ﷺ অপবাদের ভয়াবহতা সম্পর্কে তাঁর হাদীসে সুস্পষ্টভাবে সতর্ক করেছেন।
🔹 তিনি বলেন:
“যে ব্যক্তি এমন কথা বলে যা সত্য নয় এবং তাতে একজন মুসলমানকে অপবাদ দেয়, সে যেন জাহান্নামের গর্তে জায়গা করে নেয়।”
— (আবু দাউদ: ৪৮৮১)
🔹 আরেকটি হাদীসে বলেন:
“মুসলমান, মুসলমানের ভাই। সে তাকে জুলুম করে না, অপমান করে না, হেয় করে না। কারো প্রতি তাচ্ছিল্য দেখানো যথেষ্ট গোনাহ, যে তার মুসলিম ভাইকে তুচ্ছ মনে করে।”
— (সহীহ মুসলিম: ২৫৬৪)
📌 এসব হাদীস আমাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয় — মিথ্যা অপবাদ কেবল একটি সামাজিক অপরাধ নয় বরং তা একজন মুসলমানের ঈমানের জন্যও হুমকিস্বরূপ।
🤲 একজন দায়ীর অবস্থান
আমি একজন সাধারণ মানুষ, পেশাদার হুজুর, পীর বা তান্ত্রিক নই। চেষ্টা করি শিরক, বিদআত ও ভ্রান্ত ঝাড়ফুঁক থেকে মানুষকে কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে মুক্ত করতে।
আমি কখনও অর্থ গ্রহণ করি না, লোভ দেখাই না। বরং একে নিছক সেবাখেদমত মনে করি।
কিন্তু কিছু মানুষ যাচাই না করেই আমাকে “বাটপার”, “প্রতারক”, “ভণ্ড” ইত্যাদি অপবাদ দেয়।
তাদের প্রতি আমার কোনো ঘৃণা নেই। বরং আল্লাহর কাছে দোআ করি, যেন তিনি তাদের হেদায়াত দেন।
📌 সমাজকে কী করতে হবে?
🔹 কুরআনের শিক্ষা:
“হে যারা ঈমান এনেছো! অধিক ধারণা থেকে বেঁচে থাকো, কারণ কোনো কোনো ধারণা পাপ হয়। গুপ্তচরিও কোরো না, এবং তোমাদের কেউ যেন কারও পিঠ পিছনে গিবত না করে…”
— (সূরা হুজুরাত: ১২)
🔍 এই আয়াতে ইসলাম তিনটি ক্ষতিকর অভ্যাস থেকে বাঁচতে বলেছেন:
-
সন্দেহ করা
-
গুপ্তচরী করা
-
গীবত করা
📌 এগুলোই অনেক সময় অপবাদের জন্ম দেয়। সঠিক ইসলামি সমাজ গঠনের জন্য এসব আচরণ থেকে নিজেকে রক্ষা করা আবশ্যক।
✨ উপসংহার: অপবাদ নয়, হিদায়াত চাই
“সত্যের পথে অপবাদ” নতুন কিছু নয়।
রাসূলুল্লাহ ﷺ-কে পর্যন্ত ‘মিথ্যাবাদী’, ‘জাদুকর’, এমনকি ‘ভ্রষ্ট’ বলা হয়েছিল। তাই সত্যের পথে হাটলে অপবাদ আসবেই।
তবুও আমাদের কর্তব্য, সবর করা, উত্তম আচরণ করা এবং অপবাদদাতাদের জন্য দোআ করা।
কারণ — আমাদের লক্ষ্য মানুষের প্রশংসা নয়, বরং আল্লাহর সন্তুষ্টি।
🕊 দোআ:
হে আল্লাহ! আমাদেরকে অপবাদ থেকে রক্ষা করো, সত্য বোঝার তাওফিক দাও এবং দাওয়াত ও রূহানী খেদমতকে কবুল করে নাও। আমিন।
📌 পছন্দ হলে শেয়ার করুন এবং সত্যের বার্তা ছড়িয়ে দিন।
📌 বিশেষ অনুরোধ:
🙏 ❗আপনার কি মনে হচ্ছে আপনি জিন, জাদু বা বদনজরের শিকার?
আমাদের ফেসবুক পেজে মেসেজ করুন – Ruhani Jogot BD
🔔 আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন!
নতুন নতুন রহস্যময়, জ্ঞানগর্ভ এবং আকর্ষণীয় কনটেন্ট পেতে এখনই আমাদের ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেল ফলো করুন।
📘 Facebook: Ruhani Jogot BD
▶️ YouTube: [আমাদের ইউটিউব চ্যানেল – লিংক শীঘ্রই আসছে]
আপনার একটি ফলো আমাদের আগ্রহ ও অনুপ্রেরণা আরও বাড়িয়ে দেবে! 💙
✨ আরও পড়ুন:
📌 জীন ও জাদুর রোগ পরীক্ষা বা হাজিরা দেখার হাদিয়া 🧿
📌 কোন কাজের জন্য কত হাদিয়া দিতে হয় 🎁
📌 কালো জাদুর লক্ষণ কী কী ? 🌑